শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

সালমান এফ রহমান

বাংলাদেশী শিল্পপতি ও রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

সালমান এফ রহমান
Remove ads

সালমান ফজলুর রহমান (জন্ম ২৩ মে ১৯৫১) হলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, শিল্পপতি ও প্রাক্তন সংসদ সদস্য। তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্যবাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৭ সালের মার্চে চীনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হুরুন গ্লোবালে প্রকাশিত বিশ্বের ২ হাজার ২৫৭ জন ধনী ব্যক্তির তালিকায় তার অবস্থান ছিল ১৬৮৫তম। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে পূর্ণ মন্ত্রীর পদমর্যাদায় দায়িত্ব পালন করেছেন।[] তিনি বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বাণিজ্য সংস্থার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যার মধ্যে একটি ছিল অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)।[]

দ্রুত তথ্য সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ...
Remove ads

প্রারম্ভিক জীবন

জন্ম ও শিক্ষা

ফজলুর রহমান ও সৈয়দা ফাতিনা রহমান দম্পতির কনিষ্ঠ পুত্র সালমান এফ রহমান ১৯৫১ সালের ২৩শে মে ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জম্মগ্রহণ করেন।[] ম্যাট্রিক পরীক্ষা পর্যন্ত তিনি করাচির নামকরা করাচি গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা করেন। ঐ স্কুল তখন সিনিয়র কেমব্রিজ (ও-লেভেল) পড়াত। এই পদ্ধতিতে ম্যাট্রিক আর সিনিয়র কেমব্রিজ একই মানের ছিল। তিনি করাচি গ্রামার স্কুল থেকে সেইন্ট প্যাট্রিক্স স্কুলে চলে আসেন এবং ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন। ১৯৬৬ সালে ঢাকায় চলে আসেন। নটর ডেম কলেজে আইএসসিতে ভর্তি হন। এর দুই বছর পর ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে স্নাতক পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় তিনি করাচিতে চলে যান। করাচিতে গিয়ে করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর ১৯৭২ সালের মে মাসে লন্ডন চলে যান। সেখান থেকে পরে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।[][]

পারিবারিক জীবন

তিনি সৈয়দা রুবাবা রহমানের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির একজন ছেলে রয়েছে।[]

Remove ads

কর্মজীবন

১৯৬৬ সালে সালমান এফ রহমান এবং তার ভাই সোহাইল রহমান তাদের পারিবারিক পাটকল চালনার মাধ্যমে ব্যবসায় প্রবেশ করেন।[] বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১ সালে পাটকলটি সরকারীকরণ করে। ১৯৭২ সালে তারা বাংলাদেশ এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইম্পোর্ট কোম্পানি লিমিটেড (বেক্সিমকো) প্রতিষ্ঠা করে এবং এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইউরোপের দেশসমূহে সামুদ্রিক মাছ ও চূর্ণ হাড় রপ্তানি শুরু করে।[] এর বিনিময়ে তারা দেশে ঔষধ আমদানি করেন।

১৯৭৬ সালে তারা দুই ভাই বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠা করেন। এটি পরবর্তীতে লন্ডন শেয়ার বাজারের বিকল্প বিনিয়োগ বাজারে তালিকাভূক্ত হয়।[][] বেক্সিমকো ফার্মার ঔষধ যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য এবং ঔষধ প্রশাসনসহ (এফডিএ) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষের রপ্তানির অনুমোদন লাভ করে।[১০] ১৯৮২ সালে তারা দুবাই ভিত্তিক গালাধারী ভাই গ্রুপের সাথে মিলে বাংলাদেশে এবি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৫ সালে সালমান তার শেয়ার অন্য অংশীদারীদের কাছে বিক্রি করে দেন। তারা পরবর্তীতে আইএফআইসি ব্যাংকের ৩০% শেয়ার ক্রয় করেন এবং সালমান ২০১০ সালে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হন।[১১]

এছাড়াও তিনি ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের মালিক। তিনি দি ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যানও।

Remove ads

রাজনৈতিক জীবন

সালমান এফ রহমান ১৯৯০-এর দশকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তিনি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আন্দোলন নামে একটি দল গঠন করেন।[১২] ১৯৯৬ সালে এই দলের হয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচনী বিধিমালা অনুসারে এক অষ্টমাংশ ভোট না পাওয়ায় জামানত হারান।[১৩] পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে তৎকালীন বিএনপির প্রার্থী নাজমুল হুদার কাছে পরাজিত হন।[১৩][১৪]

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তখন থেকে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।[১৫] ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১৫] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি বিশ্ব ব্যাংকের ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নত করবার লক্ষে কিছু পদক্ষেপ নেন[১৬] যার ফলশ্রুতিতে ২০২০ সালে বাংলাদেশ সাত ধাপ এগিয়ে যায়।[১৭][১৮] পরবর্তীতে তিনি সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য সরকারী সংস্থাগুলির সাথে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ কিছু দেশে রোডশো আয়োজন করেন।[১৯][২০]

বিতর্ক

সারাংশ
প্রসঙ্গ

সালমান এফ রহমানের ঋণখেলাপি এবং ব্যবসায়িক কেলেঙ্কারির ইতিহাস বেশ সমালোচিত। আশির দশক থেকেই তিনি শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় তার নাম উঠে আসে।২০০৭ সালে উইকিলিকস কর্তৃক বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের একটি তারবার্তা প্রকাশ্যে আসে যাতে অভিযোগ করা হয় সালমান এফ রহমান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ঋণখেলাপি।[২১] ২০০৬-০৮ বাংলাদেশী রাজনৈতিক সংকটের সময় ২০০৭ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি অপরাধ এবং দুর্নীতির ১১টি মামলায় গ্রেফতার হন। ২০০৮ সালের ২০ আগস্ট বাংলাদেশ হাইকোর্ট ব্যাংক জালিয়াতি মামলায় তাকে জামিন প্রদান করে।[২২] ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ সুবিধা নিয়ে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজেদের নাম সরিয়ে ফেলে।[২৩][২৪][২৫]

২০১১ সালে শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির পর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি দাবি করে, নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের ভূমিকা ছিল। কমিটি তাকে শেয়ারবাজার থেকে দূরে রাখার সুপারিশ করে।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপের চাপে বৃহৎ ঋণ পুনর্গঠনের একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে। এই নীতিমালার আওতায় বেক্সিমকো গ্রুপ বিশেষ সুবিধা পায়।

২০১৬ সালের আগস্টে, সোনালী ব্যাংক সালমান এফ রহমান ও তার ভাই আহমেদ সোহেল ফশিউর রহমানের (এ এস এফ রহমান) ধানমন্ডির বাড়ি নিলামে তোলার উদ্যোগ নেয়। এটি বেসরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা জিএমজি এয়ারলাইনসের কাছে ২২৮ কোটি টাকা আদায়ের জন্য করা হয়েছিল। তবে নিলামের ঠিক আগের দিন এটি স্থগিত করা হয়।

২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামায়, সালমান এফ রহমান তার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখান ৩১২ কোটি টাকার বেশি। পাঁচ বছরের মধ্যে তার অস্থাবর সম্পদ ৩৬ কোটি টাকা বেড়েছে। সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্রুপ ও তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।[২৬]

Remove ads

গ্রেফতার

Thumb
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সালমান এফ রহমানকে নিয়ে অঙ্কিত একটি গ্রাফিতি।

সালমান এফ রহমান ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর ১৩ আগস্ট পর্যন্ত আত্মগোপনে ছিলেন। ১৩ আগস্ট নদীপথে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা সদরঘাটে পুলিশের হাতে ধরা পরেন। পলায়নকালে তিনি দাড়ি-গোঁফ কেটে বেশ পরিবর্তন করেন। বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে একজন ছাত্র ও একজন হকার নিহত হন। এ হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে তাকে গ্রেফতার করা হয়।[২৭]

Remove ads

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads