Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কূটনৈতিক বা কূটনীতিবিদ (ইংরেজি: diplomat) কোন রাষ্ট্র কর্তৃক কূটনীতিবিদ্যায় প্রশিক্ষিত ও কূটনৈতিক পদমর্যাদাসম্পন্ন মনোনীত ব্যক্তি। তিনি অন্য কোন দেশ বা আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তার প্রধান কাজই হচ্ছে নিজ দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং অক্ষুণ্ন রাখার উদ্দেশ্যে কোন কিছু উপস্থাপনা করা। এছাড়াও তিনি পারস্পরিক বন্ধুত্বমূলক সম্পর্কের উন্নয়ন ও আনুষঙ্গিক তথ্যাদি তুলে ধরেন।
একজন কূটনৈতিক রাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতির সবচেয়ে প্রাচীন পদ্ধতির একটি হিসেবে চিহ্নিত ও পরিগণিত, যা কয়েক শতক বছর ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। অধিকাংশ কূটনীতিবিদগণই আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি কিংবা আইন বিষয়ে স্বীকৃত কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারী হয়ে থাকেন।[1]
গ্রীক শব্দ διπλωμάτης, diplōmátēs, থেকে এ শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে; যিনি শিক্ষাণুক্রমিক ডিপ্লোমা ধারণ না করে কূটনীতিবিদ্যার অনুমোদনপত্র ধারণ করেন। পুরুষ কিংবা নারী হিসেবে তিনি নিজ দেশ বা সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে অন্য দেশ বা সংস্থায় প্রচলিত নিয়মের মধ্যে থেকে কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করেন।
১৯৬১ সালে ভিয়েনা সম্মেলনে কূটনৈতিক বিষয়ের পরিভাষা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে অ্যাম্বাসেডর, এনভয়, মিনিস্টার এবং চার্জ দ’অ্যাফেয়ার্সকে কূটনৈতিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কনসাল, অ্যাটাশের সাথে কূটনীতিবিদের তুলনা করা চলে। তারা নিজ রাষ্ট্রের অনেকগুলো প্রশাসনিক কার্যাবলীকে তুলে ধরেন। কিন্তু কূটনীতিবিদগণ কোন রাজনৈতিক কার্যাবলী সম্পাদন করেন না।
পদবীধারী ব্যক্তি হিসেবে একজন কূটনীতিবিদ তথ্যমূলক প্রতিবেদন সংগ্রহ ও প্রেরণ করেন, যার মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থে প্রভাব ফেলতে পারে। প্রায়শঃই তিনি উপদেশমূলক তথ্যের অন্তর্ভুক্তির জন্য নিজ দেশের সরকারকে পরামর্শ দেন। নিজ রাষ্ট্রের রাজধানী থেকে যদি কোন কারণে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তখন এ পদের অধিকারী ব্যক্তিকে তা বাস্তবায়নের জন্য প্রধান দায়িত্ব পালন করতে হয়। কূটনৈতিকদের চাকরি স্থানান্তরযোগ্য। সবচেয়ে উপযোগী ও প্ররোচনাকারী পন্থায় সম্ভবপর তিনি নিজ দেশের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী অন্য দেশের সরকারের কাছে তুলে ধরেন, কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ, এ ব্যাপারে তারা কি করছেন - এ বিষয়গুলোকে ঘিরে ঐ দেশের সরকার নিজ দেশের স্বার্থ উপযোগিতার জন্যে কিরূপ ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন ইত্যাদি তুলে ধরেন। এভাবেই বৈদেশিক নীতির মাধ্যমে উদ্ভূত যে কোন বিষয়ের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কূটনীতিবিদ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত থাকেন।
সাধারণভাবে কূটনীতিবিদদের পক্ষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করা বেশ কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অতীতে থমাস জেফারসন তাঁর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা সেক্রেটারী অব স্টেটকে একদা লিখেছিলেন যে, “আমরা গত দুই বছর ধরে আমাদের স্পেনীয় রাষ্ট্রদূতের কাছে এ ব্যাপারে কোন কিছু শুনতে পাইনি। যদি আমরা এ বছরও তাঁর কাছ থেকে কোন কিছু শুনতে না পাই, তবে আমরা তাঁকে একটি পত্র লিখব।”[2] নিরাপদ যোগাযোগ পদ্ধতি, ইমেইল এবং মোবাইল টেলিফোনের মাধ্যমে তথ্য ফাঁস হতে পারে যা মিশন প্রধানের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। একই প্রযুক্তিকে ঘুরিয়ে কূটনীতিবিদগণ দ্রুত তথ্য ধারণ করে নীতি-নির্ধারণীর জন্য নিজ দেশে প্রেরণ করে থাকেন।
নিরাপদ ইমেইলের মাধ্যমে কূটনৈতিক ও মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে থাকে। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তথ্য ফাঁস হয়ে যাবার সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ক্যাবলগ্রামের তুলনায় এতে আরো অধিক ব্যক্তিগত তথ্যাদি সুরক্ষিত থাকে। এরফলে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এর ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
নিজ দেশ থেকে অন্য কোন বহিঃদেশে প্রেরিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে মনোগত দিক থেকে কূটনৈতিকগণ প্রভাবান্বিত হতে পারেন। অনেক সময় তারা নিজ দেশের সাথে সম্পর্কচ্ছেদসহ নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে বিচ্যুত হয়ে যেতে পারেন। স্যার হ্যারল্ড নিকলসন স্বীকার করছেনে যে, “কূটনীতিবদগণ বিজাতীয়তাবোধ, আন্তর্জাতিক মনোভাবাপন্ন এবং তারপর পানি শূন্যতায় আক্রান্ত হন যা সুরুচিসম্পন্ন শূন্য খোসাবিশেষের ন্যায়”।[3]
অষ্টাদশ শতকে ইউরোপের দেশসমূহে অলঙ্করিত অবস্থায় কূটনৈতিক পোশাকের প্রবর্তন ঘটে। অষ্টাদশ শতক থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অব্যহতিকাল পর্যন্ত অধিকাংশ দেশের দূতাবাস ও কনস্যুলার কর্মকর্তা হিসেবে কূটনৈতিকগণ বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক পোশাক পরিহিত অবস্থায় অংশগ্রহণ করতেন। বর্তমানে গুটিকয়েক দেশে এ ধরনের পোশাক শুধুমাত্র কূটনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে পরিধান করতে দেখা যায়। বিংশ শতকে এসে এ পোশাকের প্রচলন প্রায় নেই বললেই চলে।[4]
ঊনবিংশ শতকে অনেক অ-ইউরোপীয় দেশে ইউরোপীয় ঘরাণার কূটনৈতিক পোশাক গ্রহণ করতে শুরু করে। তন্মধ্যে, জাপান মেইজি আন্দোলনের পর সনাতনী ধারার পোশাকের পরিবর্তে সকল কর্মকর্তাকে ইউরোপীয় পোশাক সরবরাহ করে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.