Loading AI tools
পাখির প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দক্ষিণী মেঠো ধনেশ (Bucorvus leadbeateri; প্রাক্তন নাম Bucorvus cafer), হল মেঠো ধনেশদের মধ্যে এক প্রজাতির ধনেশ এবং এরা ধনেশ প্রজাতির মধ্যে সবথেকে বড় আকারের প্রজাতি। বুকোরভাস প্রজাতির আরেকটি উপজাতি হল বায়াতকারী মেঠো ধনেশ (B. abyssinicus)।
দক্ষিণী মেঠো ধনেশ | |
---|---|
দক্ষিণী মেঠো ধনেশ লিঙ্কন পার্ক চিড়িয়াখানা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | কর্ডাটা |
শ্রেণী: | পক্ষী |
বর্গ: | Coraciiformes |
পরিবার: | Bucerotidae |
উপপরিবার: | Bucorvinae |
গণ: | Bucorvus |
প্রজাতি: | B. leadbeateri |
দ্বিপদী নাম | |
Bucorvus leadbeateri (Vigors, 1825) | |
প্রতিশব্দ | |
Bucorvus cafer (Vigors, 1825) |
এরা খুব বড় আকারের পাখি, ৯০ থেকে ১২৯ সেন্টিমিটার (৩৫.৪ থেকে ৫০.৮ ইঞ্চি) লম্বা। মহিলাদের ওজন ২.২ থেকে ৪.৬ কিলোগ্রাম (৪.৯ থেকে ১০.১ পা), আর বড় পুরুষদের ওজন ৩.৫ থেকে ৬.২ কিলোগ্রাম (৭.৭ থেকে ১৩.৭ পা)।[2] আনুমানিক মাপার মাধ্যমে জানা গেছে যে, এদের পাখনা মাপা হয়েছে ৪৯.৫ থেকে ৬১.৮ সেমি (১৯.৫ থেকে ২৪.৩ ইঞ্চি), লেজ মাপা হয়েছে ২৯ থেকে ৩৬ সেমি (১১ থেকে ১৪ ইঞ্চি), এদের গোড়ালি মাপা হয়েছে ১৩ থেকে ১৫.৫ সেমি (৫.১ থেকে ৬.১ ইঞ্চি) এবং কশেরুকার দৈর্ঘ্য হল ১৬.৮ থেকে ২২.১ সেমি (৬.৬ থেকে ৮.৭ ইঞ্চি)।[3] দেখা গেছে যে এই প্রজাতিটি লম্বায় ১১০ সেমি (৪৩ ইঞ্চি), যেখানে দক্ষিণের প্রজাতিটি ১০২ সেমি (৪০ ইঞ্চি) হয়। কিন্তু আপেক্ষিক অনুমানের ভিত্তিতে দেখা যায় যে দক্ষিণের প্রজাতিটিই তুলনায় বড়ো হয়।[4][5][6]
এদের গায়ের রঙ হয় কালো রঙের কিন্তু ওপরের অংশে এদের লাল রঙের চামড়া দেখতে পাওয়া যায়। প্রধানত মুখে এবং গলাতে এই লাল রঙের উন্মুক্ত চামড়া দেখা যায় যা তরুণদের ক্ষেত্রে হলুদ রঙের হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে যে এই চামড়াগুলো তাদের চোখকে বাচায় ধুলোর হাত থেকে। এদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যর মধ্যে পড়ে এদের ডানায় সাদা রঙের দাগ যা প্রধানত দেখতে পাওয়া যায় উড়বার সময়। এদের ঠোঁট হয় সম্পূর্ণ কালো রঙের এবং তা সোজা হয় এবং ঠোঁটের ওপরে একটা ছোটো শিরস্ত্রাণ থাকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে এই শিরস্ত্রাণ আরোও বড় হয় মহিলাদের তুলনায়। মহিলা দক্ষিণী মেঠো ধনেশরা আকারে আয়তনে তুলনায় ছোটো হয় এবং তাদের মুখ ও গলার চারপাশে লালচে বেগুনি রঙের চামড়া থাকে। তরুণরা সম্পূর্ণ লাল রঙের চামড়া পায় না ৬ বছর বয়স পর্যন্ত কিন্তু তাদের চোখ ও গলার চারপাশের চামড়া একটু ফ্যাকাশে হয় এবং হলুদ রঙের হয়।
দক্ষিণী মেঠো ধনেশদের প্রধানত দেখতে পাওয়া যায় উত্তর নামিবিয়া এবং অ্যাঙ্গোলা থেকে উত্তর দক্ষিণ আফ্রিকা, বুরুন্ডি হয়ে কেনিয়া পর্যন্ত। এরা প্রধানত সাভানা বনভূমিতে থাকতে পছন্দ করে এবং বড়ো বড়ো গাছে বাসা বেঁধে থাকতে পছন্দ করে। এরা প্রধানত ঘন কিন্তু ছোটো ছোটো ঘাস দিয়ে বাসা বাধতে ভালোবাসে।[7]
দক্ষিণী মেঠো ধনেশ হল অরক্ষিত প্রজাতি। এরা প্রধানত জাতীয় উদ্যান এবং জাতীয় সংরক্ষিত এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। এরা প্রধানত ৫ থেকে ১০ জনের দলে থাকতে পছন্দ করে যে দলের মধ্যে তরূণ থেকে প্রাপ্তবয়স্ক সবাই থাকে। তারা প্রধানত মাটিতে নেমে খাদ্য গ্রহণ করে। এদের খাদ্যের মধ্যে প্রধান হল সরীসৃপ, ব্যাঙ, শামুক, কীট এবং শশকের আকার অবধি সীমাবদ্ধ স্তন্যপায়ী।[8] দক্ষিণী মেঠো ধনেশরা খুব কম জল পান করে।[9] পশ্চিম দিকে এদের সংখ্যা খুব কম গাছ-গাছালির অভাবের জন্য।
দক্ষিণী মেঠো ধনেশরা খুব ডাকে এবং তারা দলবদ্ধ ভাবে ডাকাডাকি করে যা মোটামুটি ৩ কিলোমিটার (১.৮৬ মা) দূর থেকে শোনা যায়।[10] এই ডাকের মাধ্যমে প্রত্যেক দল তাদের অঞ্চল বজায় রাখে, যেটা হয়তো ১০০ বর্গকিলোমিটার (৪০ মা২) মতোন জায়গা জুড়ে থাকতে পারে।[10]
দক্ষিণী মেঠো ধনেশরা হল সহযোগী প্রজননকারী। প্রত্যেক দুজন প্রজননকারী পাখি অন্যান্য দুজন পাখিদের দ্বারা সহযোগী হয়।[11] এই সহায়হীন জোড়া একটি বাচ্চাদের হিসাবে দক্ষতা সাহায্য একটি পূর্ণবয়স্ক হিসাবে তরুণ প্রতিপালনের জন্য অপরিহার্য তরুণ পিছন এবং যে না পারে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এদের সর্বোচ্চ আয়ুকাল হল ৭০ বছর।[12] কিছু কিছহু ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে তারা ৩০ বছর পর্যন্ত প্রজনন করে কাতাতে পারে।[13] এদেরকে দীর্ঘায়ু পরিব্রাজক আলবাট্রসদের সাথে তুলনা করা হয়।
দক্ষিণী মেঠো ধনেশরা ৬ থেকে ৭ বছর বয়সে পরিপক্বতাতে পৌঁছায় বলে মনে করা হয় কিন্তু খুব কম সংখ্যকই এই সময়ে প্রজনন করে।[13] এদের বাসা হয় খুব গভীর গর্ত সাধারণত বড়ো বৃদ্ধ গাছের গর্তে এরা বসবাস করতে পছন্দ করে। তবে কিছু কিছু রিপোর্টে বলা আছে যে এরা শিলার মুখেও বাসা বেঁধে থাকে।[8] ১ থেকে ৩ টে ডিম পারে মহিলারা আর্দ্র আবহাওয়া শুরু হওয়ার সাথে সাথেই। এদের ডিমের পরিমাপ হয় ৭৩ মিলিমিটার (২.৮৭ ইঞ্চি) এবং ৫৬ মিলিমিটার (২.২০ ইঞ্চি) এবং এদের রঙ সম্পূর্ণ সাদা হয় কিন্তু এদের বাইরের খোলস খুব খসখসে হয়।[8]
৪০ থেকে ৪৫ দিন ধরে এরা ডিমে তা দেয়। এবং ৮৫ দিনের পক্ষোদ্ভেদ কাল ১ থেকে ৩ বছরের মধ্যে পরে এবং তা নির্ভর করে আবহাওয়ার ওপরে। যার পরেই তরুণরা বড় হয় এবং তারা স্বাধীন হয়। তখন তাদের বাবা-মা বা অন্যান্য সাহায্যকারীদের ওপরে নির্ভর করতে হয় না।[13] যা যেকোনো পাখিদের মধ্যে সবথেকে দীর্ঘতম হয়। এর আম্নে দাঁড়ায় যে এই প্রজাতিরা তিন বছরে একবারেই মাত্র প্রজনন করতে পারে। ত্রিবর্ষজীবী প্রজনন পাখিদের মধ্যে অত্যন্ত বিরল। হয়তো আরেক প্রজাতির পাখি যারা তিন বছরে একবার প্রজন করে হল সুসজ্জিত বাজপাখি-ঈগল যারা প্রধানত ঘনবর্ষণ বনাঞ্চলে বসবাস করে। [14]
এদের খুব ধীর গতির প্রজনন এবং বাসস্থান ক্ষতির জন্য তারা প্রধানত বিপন্ন প্রজাতি বলেই অনুমান করা হয়। তবে দক্ষিণ আফ্রিকাতে গবেষণার পরে দেখা গেছে যে এদেরকে গুরুতরভাবে বিপন্নদের দলে লেখা হয়েছে।
এই প্রজাতির ডাক এবং বড় আকার এদেরকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন সংস্কৃতির সাথে যুক্ত করেছে। এদেরকে হত্যার পিছনে নীতিগত বাধা ছিল। কিন্তু যা এখন আধুনিক আফ্রিকার উৎপত্তির সাথে হারিয়ে গেছে।[15] দক্ষিণ আফ্রিকানদের কাছে এই ধনেশ বর্ষাকাল নামার একটা সংকেত ছিল।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.