Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বিভাগীয় কমিশনার বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক কাঠামোতে বিভাগের মুখ্য আমলা ও রাজস্ব কর্মকর্তা। তিনি তার অধিক্ষেত্রের সকল জেলা প্রশাসকের রাজস্ব, উন্নয়ন ও প্রশাসন সংক্রান্ত কাজের তদারকি করেন। বাংলাদেশের পদমর্যাদা ক্রম অনুযায়ী কমিশনারের পদক্রম ২১ নম্বরে অবস্থিত।
এর সদস্য | বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস |
---|---|
যার কাছে জবাবদিহি করে | মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ |
আসন | বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় |
নিয়োগকর্তা | জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় |
গঠন | ১৮২৯ |
ডেপুটি | অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার |
বিভাগীয় কমিশনার পদটি সৃষ্টি হয় ১৮২৯ সালে ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি শাসনামলে। ঐ সময় অনুভূত হয় যে, বিভাগীয় রাজস্ব প্রশাসনে কোনো কার্যকর নিয়ন্ত্রণ নেই। এছাড়া বিচারব্যবস্থা ও রাজস্ব পদ্ধতির কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন এবং তত্ত্বাবধানেরও অভাব পরিলক্ষিত হয়। এরকম পরিস্থিতি থেকেই পরবর্তীকালে রাজস্ব বোর্ড বিলুপ্ত করে তার পরিবর্তে কমিশনারের পদ সৃষ্টি করা হয়।[1]
মাঠ প্রশাসনে পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে সরকার কর্তৃক নিয়োগ প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসকদের কাজ তদারক, পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করা বিভাগীয় কমিশনারের প্রধান কর্তব্য। কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যাবলী বিভাগীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিভাগীয় কমিশনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
বিভাগীয় কমিশনার তাঁর বিভাগাধীন সকল জেলা এবং উপজেলায় সহকারী কমিশনার, সহকারী কমিশনার (ভুমি), উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের বদলি এবং পদায়ন করেন। তাছাড়া, ভূমি অফিসে কর্মরত ভূমি উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা, কানুনগো, সার্ভেয়ারদের বিভাগাধীন আন্তঃজেলা বদলি করেন।
বিভাগীয় পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের কার্যাবলী সমন্বয় সাধন বিভাগীয় কমিশনারের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব । এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার বিভাগাধীন জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহ তার দপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের কার্যক্রম তদারকি করেন, প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন এবং এ সংক্রান্ত অগ্রগতি, মূল্যায়ন সময়ে সময়ে সরকারকে অবহিত করেন।
বিভাগের ভূমি রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত কার্যাবলী পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করেন । তিনি বিভাগের প্রধান রাজস্ব অফিসার হিসেবে রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন করন। রাজস্ব বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের আদেশের বিরুদ্ধে তিনি আপিল শুনানী গ্রহণ করে থাকেন।
পুলিশ রেগুলেশন ১৯৪৩ অনুযায়ী জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে স্থানীয় পুলিশ বিভাগের ওপর সাধারণ নিয়ন্ত্রণ করেন। তবে পুলিশ বিভাগের অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতি মাসে টাস্ক ফোর্স সভা, বিভাগীয় আইন শৃঙ্খলা সভা, বিভাগীয় রাজস্ব সম্মেলন, বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভা এবং ত্রৈমাসিকভাবে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাগণের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় কমিশনার পদাধিকার বলে বিভাগীয় নির্বাচনী বোর্ডের সভাপতি। এ বোর্ড তাঁর কার্যালয়, ডিআইজির কার্যালয়, পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়, বিভাগাধীন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে তৃতীয় এবং ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন।
তিনি নিয়মিতভাবে বিভাগাধীন সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পরিদর্শন করেন।
বিভাগীয় কমিশনার বিভাগীয় পর্যায়ের প্রটোকল প্রধান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে তিনি প্রধান প্রটোকল অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন।
বিভাগীয় কমিশনার রাজস্ব মামলা, নামজারি মামলা ও জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত গঠিত আপিলেট কর্তৃপক্ষ। এ সংক্রান্ত আপিল তিনি নিষ্পত্তি করেন।
বিভাগীয় কমিশনার বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা ছাড়াও যে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্তকার্য পরিচালনা করে থাকেন।
বিভাগাধীন জেলা এবং উপজেলায় ত্রাণ সামগ্রী বরাদ্দের বিষয় তদারকি করেন। তাছাড়া দুর্যোগকালীন সময়ে তিনি উদ্ধার কার্য মনিটরিং করেন।
রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত কার্যাদি। সাইফার ও ডি-সাইফার সম্পর্কিত পুস্তকাদির সংরক্ষণ এবং প্রাপ্ত সাইফার বার্তা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ। গোপনীয় পুস্তকাদির নিরাপদ হেফাজত সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রেরণ। KPI এর নিরাপত্তা এর তদারকি। বিভাগীয় সার্বিক অবস্থার পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন সরকারের কাছে প্রেরণ।
প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প সমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রেরণ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত মাসিক সমন্বয়/পর্যালোচনা সভায় যোগদান। বিভাগীয় পর্যায়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার স্বাক্ষী হাজিরা ও প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গঠিত বিভাগীয় মনিটরিং কমিটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপনের ব্যাপারে সরকার কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন। অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিভাগীয় কমিশনার অফিসে ত্রিপক্ষীয় সভা অনুষ্ঠান। পাবলিক প্রকিউরম্যান্ট রেগুলেশন-২০১৩ অনুযায়ী বিভাগীয় দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন। অভ্যন্তরীন খাদ্য শস্য সংগ্রহ সংক্রান্ত বিভগীয় কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন। প্রাথমিক শিক্ষা পদক নীতিমালা অনুসারে বিভাগীয় বাছাই কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন। জাতীয় পরিবেশ পদক নীতিমালা অনুযায়ী বিভাগীয় পদক মূল্যায়ন কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন।[2]
বিভাগ | নাম | কার্যকাল |
---|---|---|
বরিশাল বিভাগ | মোঃ শওকত আলী | ১৩ জুলাই ২০২৩[4] |
চট্টগ্রাম বিভাগ | মোঃ তোফায়েল ইসলাম | ১৮ জুলাই ২০২৩[5] |
ঢাকা বিভাগ | মোঃ সাবিরুল ইসলাম | ৬ এপ্রিল ২০২৩ [6] |
খুলনা বিভাগ | মোঃ হেলাল মাহমুদ শরীফ | ১৫ জুন ২০২৩[7] |
ময়মনসিংহ বিভাগ | উম্মে সালমা তানজিয়া | ১৩ জুলাই ২০২৩[8] |
রাজশাহী বিভাগ | ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির | ২২ জুলাই ২০২৩[9] |
রংপুর বিভাগ | মোঃ হাবিবুর রহমান | ৫ এপ্রিল ২০২৩[10] |
সিলেট বিভাগ | আবু আহমেদ সিদ্দিকী, এনডিসি | ২৫ জুলাই ২০২৩ই ২০২৩[11] |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.