শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

শ্রীলঙ্কার বনমোরগ

পাখির প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

শ্রীলঙ্কার বনমোরগ
Remove ads

শ্রীলঙ্কার বনমোরগ (Gallus lafayetii) (ইংরেজি: Sri Lanka Junglefow বা La Fayette's Jungle Fowl ) ফ্যাজিয়ানিডি (Phasianidae) গোত্র বা পরিবারের অন্তর্গত গ্যালাস (Gallus) গণের এক প্রজাতির বনমোরগ। পাখিটি সারা বিশ্বে কেবলমাত্র শ্রীলঙ্কায় পাওয়া যায়, অর্থাৎ এটি শ্রীলঙ্কার এন্ডেমিক বা স্থানিক পাখি। ঔপনিবেশিক আমলে এই প্রজাতিটি সিলন বনমোরগ (Ceylon Junglefowl) নামে অভিহিত ছিল। শ্রীলঙ্কার বনমোরগ একই গণের সাধারণ বনমোরগ (Gallus gallus) ও ধূসর বনমোরগের (Gallus sonneratii) সাথে বেশ গাঢ়ভাবে সম্পর্কিত। তবে সবচেয়ে বেশি মিল দেখা যায় সবুজ বনমোরগের (Gallus varius) সাথে। আই. ইউ. সি. এন. এই প্রজাতিটিকে Least Concern বা আশঙ্কাহীন বলে ঘোষণা করেছে।[] প্রজাতিটি শ্রীলঙ্কার জাতীয় পাখি। সিংহলিজ ভাষায় এর নাম ওয়ালি কুকুলা

দ্রুত তথ্য শ্রীলঙ্কার বনমোরগ, সংরক্ষণ অবস্থা ...
Remove ads
Thumb
Gallus lafayettii
Remove ads

বিবরণ

Thumb
শ্রীলঙ্কার বনমোরগ, উইলপাত্তু জাতীয় উদ্যান, শ্রীলঙ্কা

দূর থেকে দেখলে শ্রীলঙ্কার বনমোরগ প্রায় সাধারণ বনমোরগের মতোই। তবে সূক্ষ্ম কিছু পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে। মোরগ সাধারণ বনমোরগের মতোই বড়সড়, সুন্দর ঝালরাবৃত লালচে, সোনালি ও কালো পালক জড়িত পিঠ ও ডানাসম্বৃদ্ধ একটি পাখি। তবে সাধারণ বনমোরগের তুলনায় এরা একটু লম্বাটে। সামনের দিকটা হলদে ও কমলা-লাল রঙের। মাথা থেকে গলা ও মেরুদণ্ডের গোড়া পর্যন্ত পালকের রঙ সোনালী-হলুদ। ডানা ও লেজ কালো ও গাঢ় বেগুনি পালকে আবৃত। প্রলম্বিত লেজের পালক নিচের দিকে বাঁকানো। মুখ ও মুখের আশপাশ পালকহীন এবং লাল রঙের। মাথায় লাল মাংসল ঝুঁটি থাকে। ঝুঁটিতে একছোপ হলুদ রঙ ঝুঁটির সৌন্দর্য্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ঠোঁটের নিচে দু'টি লাল ঝুলন্ত লতিকা থাকে। সাদা কর্ণপটহ দৃশ্যমান।[] চোখের আইরিস হলুদ, পা লাল, ঠোঁট ময়লা হলুদ। মোরগের দৈর্ঘ্য ৬৬-৭২ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৭৯০-১১৪০ গ্রাম।[]

বনমুরগী তুলনায় ছোট ও লেজে বাহারি পালক নেই। পালক বাদামী ও মেটে-বাদামী। পেটের দিকটা সাদাটে। লেঝের গোড়ায় কিছু কালো ডোরা থাকে। লতিকা থাকে না, ঝুঁটি ছোট ও ফ্যাকাসে বর্ণের। পা হলুদ, ঠোঁট সীসা বর্ণের, চোখের আইরিস বনমোরগের মতোই। বনমুরগীর দৈর্ঘ্য কমবেশি ৩৫ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৫১০-৬৪৫ গ্রাম।[]

Remove ads

আচরণ

বনমোরগ-মুরগী একাকী, জোড়ায় বা ছোট দলে ঘুরে বেড়ায়। মাটি থেকে কুড়িয়ে বিভিন্ন শস্যদানা, ঘাসের গোড়া, কচিপাতা, কেঁচো, কীটপতঙ্গ, ফল এসব খায়। খুব ভোরে ও সন্ধ্যার আগে আগে বনের পাশের খোলা জায়গায় খাবার খেতে আসে। শীতের সময় কুয়াশা থাকা অবস্থায় খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। বনের কোনো গাছতলায় পাকা ফল ঝরে পড়া শুরু করলে বনমোরগ-বনমুরগী প্রতিদিন সকাল-বিকাল সেই গাছতলায় আসে। আবার বনের বড় গাছে উঠেও এদের ফল খেতে দেখা গেছে। রাত কাটায় উঁচু গাছের ডালে বা বাঁশঝাড়ে। সামান্য শব্দে ভীত হয়ে উড়ে গিয়ে বসবে গাছের মগডালে। পালানোর সময় পোষা মুরগির মতোই কক্ কক্ করে ডাকে। বিবর্তনের দীর্ঘ ধারায় এরা শিকারী প্রাণীর হাত থেকে বাঁচার জন্য লুকিয়ে থাকার জটিল পদ্ধতি রপ্ত করেছে।

Remove ads

প্রজনন

বনমোরগ-বনমুরগীর সম্পর্কটা আসলে অনেকটা এক নারী, অনেক পুরুষ সম্পর্কের মত। একটি বনমুরগী দু'টি বা তিনটি বনমোরগের সাথে ছোট দলে ঘুরে বেড়ায়। বনমুরগী কেবল প্রধান মোরগের সাথেই জোড়া বাঁধে। বনমুরগী মাটিতে বাসা করে। অনেকসময় কাঠবেড়ালী বা অন্য পাখির পরিত্যক্ত বাসাতেও বাসা করে। শ্রীলঙ্কার বনমোরগ বাসা তৈরিতে সহায়তা করে, সাধারণ বনমোরগ সেটা করে না।

Thumb
বনমোরগ, অঙ্কিত চিত্র
Thumb
বনমুরগী, অঙ্কিত চিত্র

বাসা বানানো শেষে বনমুরগী ২-৪ টি ডিম দেয়। ডিমের বর্ণে বিভিন্নতা দেখা গেলেও সাধারণত ক্রীম রঙের উপর হলুদ বা গোলাপী বর্ণের ছিট ছিট দেখা যায়। এছাড়াও বেগুনী ও বাদামী বর্ণেরও ছিটা দেখা যায়। লাল বর্ণের ডোরাকাটা ডিমও দুর্লভ নয়। বনমুরগী একাই ডিমে তা দেয়। দলের অন্যান্য পুরুষ সদস্যেরা বাসার আশেপাশে অবস্থান করে ও বাসা পাহারা দেয়। সাধারণত বিশ দিন পরে ডিম ফুটে ছানা বের হয়।[] ফোটার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই ছানাগুলো বাসা ছাড়ে ও মায়ের সঙ্গে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। শুধু বনমুরগী ছানা প্রতিপালন করে।

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

Loading content...
Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads