শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
জাতীয় সংসদ
বাংলাদেশের এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
জাতীয় সংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভা। এককক্ষ বিশিষ্ট এই আইনসভার সদস্য সংখ্যা ৩৫০; যার মধ্যে ৩০০ জন সংসদ সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন এবং অবশিষ্ট ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যগণ নির্বাচিত ৩০০ সংসদ সদস্যের ভোটে (পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিতে) নির্বাচিত হন।[২] সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর।
ডিসেম্বর ২০০৮ জাতীয় নির্বাচনে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন । ৫ আগস্ট ২০২৪ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পলায়নের পর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ৬ আগস্ট, ২০২৪ সংসদ ভেঙে দেন।[৩][৪]
Remove ads
সংসদ ভবন
বাংলাদেশের প্রথম ও দ্বিতীয় সংসদ অধিবেশনগুলো অনুষ্ঠিত হয় পুরনো সংসদ ভবনে যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ ভবন পৃথিবীর দৃষ্টিনন্দন আইনসভা ভবনের একটি। রাজধানী ঢাকার শের-ই-বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার আয়তন ২১৫ একর। যেখানে মূল ভবনের পাশাপাশি রয়েছে উন্মুক্ত সবুজ পরিসর, মনোরম জলাধার ও সংসদ সদস্যদের কার্যালয়।
১৯৬১ সালে ৯ তলা এ ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ইতিহাসের নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ১৯৮২ সালের ২৮ জানুয়ারি এ ভবনের উদ্বোধন করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এ ভবনের নকশা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত স্থপতি লুই আই কান।[৫] সংসদ ভবন এলাকাকে প্রধান ভবন, দক্ষিণ প্লাজা ও প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা এই তিনটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। সংসদের পেছন দিকে ক্রিসেন্ট লেক নামে একটি নান্দনিক জলাধার রয়েছে।[৬]


Remove ads
আসন বিন্যাস
জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদ সদস্যদের আসন সংখ্যা ৩৫০, অতিথি আসন সংখ্যা ৫৬, কর্মকর্তা আসন সংখ্যা ৪১, সাংবাদিক আসন সংখ্যা ৮০ এবং দর্শক আসন সংখ্যা ৪৩০।
সদস্য পদ
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে হলে আগ্রহী প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হওয়া ছাড়াও বয়স ২৫ বছরের ঊর্ধ্বে হতে হবে। এছাড়া অপ্রকৃতিস্থ, দেউলিয়া কিংবা দ্বৈত নাগরিকত্ব এক্ষেত্রে প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হবে।[৭]
সদস্যরা তাদের নিজ নিজ আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে অধিকাংশের ভোটে নির্বাচিত হন। সদস্যগণ ৫ বছর মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হন। তারা নিরপেক্ষ বা একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অধিভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন।[৭]
ক্ষমতা ও অধিকার
সারাংশ
প্রসঙ্গ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়ে একটি মন্ত্রিসভা নিয়োগ করেন। [৭] প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই একজন সংসদ সদস্য হতে হবে এবং মন্ত্রীসভার ৯০% সদস্যকেও সংসদ সদস্য হতে হবে। [৮][৯] রাষ্ট্রপতিকে অবশ্যই একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে, যিনি নিজের যুক্তিযুক্ত মতামতে, সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থন রাখেন। [১০] মন্ত্রিসভা সর্বদা সংসদের কাছে এবং প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছেও জবাবদিহি করেন। [৭]
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি উন্মুক্ত ব্যালট ভোটের মাধ্যমে সংসদ দ্বারা নির্বাচিত হন। [১১] ফলস্বরূপ, বিরোধীদলের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের খুব কমই সুযোগ থাকে। ফলে সাধারণত বিরোধীদল রাষ্ট্রপতি পদের জন্য কোনো প্রার্থী মনোনীত করে না এবং সরকারি দলের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন এবং পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ,[১২] জিল্লুর রহমান,[১৩] একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী [১৪] এবং শাহাবুদ্দিন আহমেদ সকলেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। সংসদ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে রাষ্ট্রপতিকে অভিশংসনও করতে পারে। [৭]
বিল পরীক্ষা, সরকারি নীতি পর্যালোচনা এবং জনগুরুত্বপূর্ণ অন্য যেকোন বিষয়ে সংসদ যেকোনো সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করতে পারে। [৭] তবে এই কমিটির কার্যত ক্ষমতা সবসময়ই ছিল নামমাত্র; বিচারিক ক্ষমতাও অস্পষ্ট,[১৫] বিশেষ করে যদি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে সংসদীয় কমিটি এবং সিনিয়র বেসামরিক কর্মচারীদের কাছে জবাবদিহি করার প্রয়োজন নেই। সরকারী প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে সরকারকে সংসদীয় কমিটির কাছে খুব কমই জবাবদিহি করতে হয়। [১৬]
বাংলাদেশের সংবিধানের ৭০ নং অনুচ্ছেদে সংসদ সদস্যদের ফ্লোর ক্রসিং (নিজ দল থেকে পদত্যাগকৃত সাংসদ), মুক্ত ভোট (নিজ দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়া) বা অনাস্থা প্রস্তাব পাস করার ক্ষেত্রে সংসদকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সাধারণ বুদ্ধিজীবী, সংবাদপত্র ও সাংবাদিক, নাগরিক অধিকার কর্মী এবং সংসদের অনেক সদস্য আইনটির সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। সমালোচকরা যুক্তি দেন যে ৭০ নং অনুচ্ছেদ বাক স্বাধীনতা এবং বিবেকের স্বাধীনতাকে হরন করে এবং এটি সংবিধানের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। উপরন্তু, এই অনুচ্ছেদে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রধানমন্ত্রীকে বিশাল ক্ষমতা প্রদান এবং ক্ষমতার ভারসাম্যকে সীমিত করা হয়েছে।
সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদ সংসদীয় অধিবেশনের মধ্যে সদস্যদের বক্তৃতা এবং কর্মের জন্য বিচার বিভাগকে জবাবদিহি করতে হবে না। [৭] ৪৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, জাতির সেবায় যে কাউকে ক্ষমা প্রদানের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত [৭] এই অনুচ্ছেদের অধিনে ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদকে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ অনুমোদন করার অনুমতি দেওয়া হয়।
Remove ads
সংসদের ব্যাপ্তি
সারাংশ
প্রসঙ্গ
সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর। কিন্তু দেশের সংকটকালে সংবিধান সমুন্নত রাখতে আইন পাসের মাধ্যমে এ মেয়াদের হেরফের হতে পারে। [১৭]
Remove ads
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারদের তালিকা
Remove ads
বিতর্কিত নির্বাচন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৩ সালে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল আসনে জয় লাভ করেছিল। তবে অধিকাংশ বিরোধী পক্ষ এটিতে একটি পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। তৎকালীন ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপতি তথা সামরিক স্বৈরশাসন জিয়াউর রহমানের গঠিত দল বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল।
একাধারে ১৯৮৬ সালের তৃতীয় এবং ১৯৮৮ সালের চতুর্থ সংসদ নির্বাচন উভয়ই হয়েছিল তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তথা সামরিক স্বৈরশাসন এরশাদের অধীনে। অধিকাংশ বিরোধী পক্ষের বয়কটের মুখে এই দুইটি নির্বাচনকে বিতর্কিত হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়ে থেকে।
১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যতম একটি বিতর্কিত নির্বাচন। এই নির্বাচনে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপি সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল। বিরোধী জোটের তীব্র আন্দোলনের মুখে এই সংসদের পতন ঘটে। এর স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ১২ কর্মদিবস।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারায় চরম ব্যাঘাত ঘটে। বিএনপি এবং শরীক দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের ফলে আওয়ামী লীগ একচেটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে আখ্যায়িত করা হয় ‘রাতের ভোটের নির্বাচন’ হিসেবে। এই বিতর্কিত নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পূর্বেই সরকার দলীয় ক্যাডারদের মাধ্যমে ব্যালট বাক্স পূর্তির অভিযোগ ও প্রমাণ পাওয়া যায়। এই নির্বাচনে এসে বিএনপি এবং শরীক দলগুলোর চরম ভরাডুবি ঘটেছিল।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অদ্যাবধি সংগঠিত শেষ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ‘আমি এবং ডামি’ নির্বাচন হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন অনেকে। এই নির্বাচনে বিরোধী পক্ষের উপস্থিতি না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজের সংগঠনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ডামি হিসেবে নির্বাচনে এনে নাটক সাজায়। ২০২৪ সালের আগষ্ট মাসে গণঅভ্যুত্থানের মুখে এই সংসদের বিলুপ্তি ঘটে। বর্তমানে এই সংসদের অধিকাংশ সদস্য পলাতক অথবা কারাবন্দি।
Remove ads
২০২৬ সালের বাংলাদেশ সাধারণ নির্বাচন
২০২৬ সালে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।[২০]
প্রথমদিকে, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা করেছিলেন যে নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে।[২১]
তবে পরবর্তীতে, ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে তিনি নতুন ঘোষণা দেন যে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, রমজানের পূর্বেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।[২২]
এভাবে, সর্বশেষ ঘোষণার ভিত্তিতে বলা যায় যে, বাংলাদেশে জাতীয় সাধারণ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।[২২]
Remove ads
সূত্র
- এপি নিউজ – বাংলাদেশে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার
- রয়টার্স – বাংলাদেশের নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে
- টাইমস অব ইন্ডিয়া – বাংলাদেশের নির্বাচন রমজানের আগে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে
(সংশোধনযোগ্য)
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads