শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ

সাধারণতন্ত্র দিবস (ভারত)

ভারতের জাতীয় দিবস যা ভারতীয় সংবিধান কার্যকর দিবস উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

সাধারণতন্ত্র দিবস (ভারত)
Remove ads

ভারতবর্ষ দেশটি হল সার্বভৌম সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাধারণতন্ত্র। প্রতিবছর ২৬শে জানুয়ারি ভারতে সাধারণতন্ত্র দিবস বা প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হয় । ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি তারিখে ভারত শাসনের জন্য ১৯৩৫ সালের ভারত সরকার আইনের পরিবর্তে ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ঘটনাকে স্মরণ করে।[] এটি ভারতের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় গণপরিষদ সংবিধান কার্যকরী হলে ভারত একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়।

দ্রুত তথ্য সাধারণতন্ত্র দিবস, পালনকারী ...

কার্যকরী হওয়ার ঠিক দুই মাস আগে, ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর গণপরিষদ কর্তৃক ভারতের সংবিধান অনুমোদিত হয়। ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে সংবিধান কার্যকর করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ঐ একই দিনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কর্তৃক পূর্ণ স্বরাজের সংকল্প ঘোষিত ও গৃহীত হয়েছিল।

এই দিনটি ভারতের তিনটি জাতীয় দিবসের অন্যতম। অন্য দু'টি জাতীয় দিবস যথাক্রমে স্বাধীনতা দিবসগান্ধী জয়ন্তী এই দিন সারা ভারতেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয় কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানটি হয় নতুন দিল্লির রাজপথে। ভারতের রাষ্ট্রপতি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন।

Remove ads

ইতিহাস

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ (ঘোড়ায়-টানা গাড়িতে) নয়াদিল্লীর রাজপথে প্রথম সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, ১৯৫০।

১৫ আগস্ট ১৯৪৭ এ দীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের ফলে ভারত ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্তি পায়। এই স্বাধীনতা আন্দোলনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে পরিচালিত, প্রায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ অহিংস অসহযোগ আন্দোলনআইন অমান্য আন্দোলন। স্বাধীনতা লাভের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হয় যুক্তরাজ্যের সংসদে ভারতীয় স্বাধীনতা আইন পাশ হওয়ার মাধ্যমে। এর ফলে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে গিয়ে কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এর অন্তর্গত অধিরাজ্য হিসেবে দু'টি স্বাধীন রাষ্ট্র ভারতপাকিস্তানের জন্ম হয়।[] ১৫ই আগস্ট ১৯৪৭ এ ভারত স্বাধীন হলেও দেশের প্রধান হিসেবে তখনও বহাল ছিলেন ষষ্ঠ জর্জ এবং লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ছিলেন এর গভর্ণর জেনারেল। তখনও দেশে কোনো স্থায়ী সংবিধান ছিল না; ঔপনিবেশিক ভারত শাসন আইনে কিছু রদবদল ঘটিয়েই দেশ শাসনের কাজ চলছিল। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ আগস্ট একটি স্থায়ী সংবিধান রচনার জন্য ড্রাফটিং কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ভীমরাও রামজি আম্বেডকর। ৪ নভেম্বর ১৯৪৭ তারিখে কমিটি একটি খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করে গণপরিষদে জমা দেয়।[] চূড়ান্তভাবে সংবিধান গৃহীত হওয়ার আগে ২ বছর, ১১ মাস, ১৮ দিন ব্যাপী সময়ে গণপরিষদ এই খসড়া সংবিধান আলোচনার জন্য ১৬৬ বার অধিবেশন ডাকে। এই সমস্ত অধিবেশনে জনসাধারণের প্রবেশের অধিকার ছিল। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর স্বাধীন ভারতের সংবিধান গৃহীত হবার পর ঠিক করা হয় ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রথম স্বাধীনতা দিবস পালনের সেই দিনটিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি থেকে ভারতের সংবিধান কার্যকর হবে এবং সেদিন থেকে প্রজাতান্ত্রিক ভারতবর্ষ বা রিপাবলিক অফ ইন্ডিয়া হিসেবে পরিচিত হবে। বহু বিতর্ক ও কিছু সংশোধনের পর ১৯৫০ সালের ২৪ জানুয়ারি গণপরিষদের ২৮৪ জন সদস্য চূড়ান্ত সংবিধানের হাতে-লেখা দু'টি নথিতে (একটি ইংরেজি ও অপরটি হিন্দি) স্বাক্ষর করেন। এর দু'দিন পর সারা দেশব্যাপী এই সংবিধান কার্যকর হয়।

Remove ads

উদ্‌যাপন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের প্রধান কর্মসূচী পালিত হয় ভারতের রাষ্ট্রপতির সামনে, জাতীয় রাজধানী নয়াদিল্লীতে। এই দিন রাজপথে আড়ম্বরপূর্ণ কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় যা ভারত রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়।

২০১৪ খ্রিস্টাব্দের ৬৫ তম সাধারণতন্ত্র দিবসে মহারাষ্ট্র সরকার প্রথম বার দিল্লী সাধারণতন্ত্র দিবস কুচকাওয়াজের অনুকরণে মেরিন ড্রাইভ বরাবর তাদের নিজস্ব কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছিল। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের রাজধানীতে সংশ্লিষ্ট মুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজও অনুষ্ঠিত হয়।

দিল্লী সাধারণতন্ত্র দিবস কুচকাওয়াজ

সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জাতীয় রাজধানী নতুন দিল্লীতে কুচকাওয়াজ হয় রাষ্ট্রপতির আবাসস্থল রাষ্ট্রপতি ভবনের নিকটবর্তী রাইসিনা হিল থেকে রাজপথ বরাবর ইন্ডিয়া গেট ছাড়িয়ে।[] কুচকাওয়াজ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে রাষ্ট্রপতি রাজপথের একপ্রান্তে অবস্থিত ইন্ডিয়া গেটে শহিদ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে নির্মিত স্মারক অমর জওয়ান জ্যোতি-তে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এর পর ঐ সৈন্যদের উদ্দেশ্যে ২ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। স্বাধীনতা আন্দোলন ও তার পরবর্তী যুদ্ধ গুলিতে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শহিদ সৈন্যদের প্রতি এইভাবে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। এর পর রাষ্ট্রপতি অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মিলিত হন এবং প্রধান অতিথির সাথে রাজপথে অবস্থিত অনুষ্ঠানের মূল মঞ্চে আসেন। রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষীরা ঘোড়ার পিঠে চড়ে তাদের পথপ্রদর্শন করেন।

বীটিং রিট্রীট

বীটিং রিট্রীট দ্বারা সাধারণতন্ত্র দিবস উদ্‌যাপনের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হয়। সাধারণতন্ত্র দিবসের ৩ দিন পর, শে জানুয়ারি সন্ধ্যেবেলা বীটিং রিট্রীট অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের সামরিক বাহিনীর তিন প্রধান শাখা ভারতীয় স্থলসেনা, ভারতীয় নৌবাহিনী এবং ভারতীয় বায়ুসেনা এই রিট্রীটে অংশ নেয়। রাজপথের প্রান্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সচিবালয় ও রাষ্ট্রপতি ভবনের নর্থ ব্লক ও সাউথ ব্লক ভবন দু'টির মধ্যবর্তী রাইসিনা হিলবিজয় চকে এই অনুষ্ঠানটি হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি, যিনি অশ্বারোহী পিবিজি (প্রেসিডেন্টস বডিগার্ডস/ রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষক) কর্তৃক পথপ্রদর্শিত হয়ে আসেন। তিনি উপস্থিত হলে পিবিজির অধিনায়ক তার বাহিনীকে জাতীয় অভিবাদনের (স্যালুট) নির্দেশ দেন। এর পর সামরিক বাহিনী কর্তৃক ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয়। এই সঙ্গীতের পাশাপাশি সম্মিলিত স্থল, জল ও বায়ুসেনার বিভিন্ন ব্যান্ড, পাইপ, ভেরী প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের কুশলীরা অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে সারে জাঁহা সে আচ্ছা প্রভৃতি দেশাত্মবোধক গানের আয়োজনও করেন।[][][]

Remove ads

চিত্রশালা

সাম্মানিক অতিথি

সারাংশ
প্রসঙ্গ
Thumb
সাধারণতন্ত্র দিবস কুচকাওয়াজে ভারতে আহূত রাষ্ট্রসমূহ (গাঢ় নীল)। ভূতপূর্ব যুগোস্লাভিয়া (২ বার আহূত)-কে দেখানো হয়নি।

১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের থেকে ভারত সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অথবা গুরুত্বপূর্ণ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে সাম্মানিক রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে বরণ করে আসছে। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এই কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয় (আরউইন মঞ্চ, কিংসওয়ে, লালকেল্লারামলীলা ময়দান)।[] ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দের থেকে বর্তমান স্থানটি নির্দিষ্ট হয়।[] অতিথি রাষ্ট্র কে হবে তা নির্ধারিত হয় কৌশলগত, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনা করে। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ এর দশকের মধ্যে বেশ কিছু জোট-নিরপেক্ষপূর্ব ব্লক রাষ্ট্রকে ডাকা হয়েছিল। ঠান্ডা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অনেক পাশ্চাত্য নেতাকেও ডাকা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হল এই যে, চীনপাকিস্তানের সাথে ভারতের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আগে পর্যন্ত ঐ দুই রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দ সাধারণতন্ত্র দিবসে ভারতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দের সাধারণতন্ত্র দিবসে পাকিস্তানের খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ভারতের সাম্মানিক অতিথি ছিলেন, এবং এর কয়েক দিন পরেই দুই দেশের যুদ্ধ বাধে। একাধিকবার যে সমস্ত রাষ্ট্র আমন্ত্রিত হয়েছে তাদের মধ্যে আছে প্রতিবেশী (ভুটানশ্রীলঙ্কা), প্রতিরক্ষা মিত্র (ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন/রাশিয়া, যুক্তরাজ্য), বাণিজ্য সহযোগী (ব্রাজিল) এবং জোট-নিরপেক্ষ মিত্রগোষ্ঠী (নাইজিরিয়া ও ভূতপূর্ব যুগোস্লাভিয়া)। ভুটানফ্রান্স সবচেয়ে বেশি বার (চার বার) আমন্ত্রিত হয়েছে, আর তাদের পরেই আছে মরিশাসসোভিয়েত ইউনিয়ন/রাশিয়া: শেষোক্ত দুই দেশই আমন্ত্রিত হয়েছে তিন বার করে।

আরও তথ্য বছর, অতিথির নাম ...


Remove ads

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Remove ads